নুরুল আবছার চৌধুরী
রাঙ্গুনিয়া উপজেলার পোমরা ইউনিয়নের কাউখালি ভূমি অফিসে ব্যাপকভাবে চলছে সীমাহীন দূর্নীতি, অনিয়ম ও মানুষের প্রতি এত যে হয়রানী করা হচ্ছে এসব অভিযোগ ভুক্তভোগীদের। ওইসব দূর্নীতি কারনে মফস্বলে থাকা লোকজন যে কোন মুহুর্তে ফুসে উঠেছে পারে। সরেজমিনে গেলে একাধিক লোকজনের অভিযোগে জানা যায়, পোমরা ইউনিয়নে অবস্থিত কাউখালি তহশীল ভূমি অফিসে নামজারি, জমাভাগ, খাজনা আদায় ও ভূমি সংক্রান্ত সংশোধনের নামে ভুক্তভোগীদের কাছ থেকে মোটা অংকের প্রকাশ্যে ঘুষ নিচ্ছেন। টাকা নেওয়ার পরও মাসের পর মাস কাজ না করে সাধারন মানুষকে হয়রানী করা হচ্ছে বলে গুরুতর ভাবে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
পোমরা ইউনিয়নের রোশাই পাড়ার মো: হারুন বলেন, আমার এক স্বজন গত ১৫ দিন পূর্বে নামজারী করতে পোমরা কাউখালি ভূমি অফিস গেলে তার কাছ থেকে পাঁচ হাজার টাকা নেন। এর পরও কাজ না করে বিভিন্নভাবে সমস্যা দেখিয়ে বিরামহীন ভাবে হয়রানী করছে। ওখানে কাজে আসা একজন দালাল দয়াল হরি নামে ব্যক্তি বলেন, ভুমি অফিসে একবারে টাকা দিলে হয় না। একাধিকবার টাকা মারতে হয়। তারপর কাজ হয়। দালাল হরি শীল আরো বলেন, আওয়ামী শাসন আমলে ভাল টাকা* কামিয়েছি। দুই পকেটে টাকা নিয়ে বাড়ীতে যেতাম। এখন একদম নেই। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই সময়ে আরেকজন ব্যক্তি দালাল দয়াল হরি কে দেখিয়ে দিয়ে বলেন, ওনি আমার কাছ থেকে ৫০০০ হাজার টাকা নেন কাজ করার নামে। ওখান থেকে কর্মকর্তা কে টাকার ভাগ না দিয়ে সমোদয় টাকা আত্মাসাৎ করে পেলে। তার নির্দেশে আবার জনৈক কর্মকর্তা কে আরো পাঁচ হাজার হাজার টাকা দিতে হয়। পূর্বে টাকার কথা মনে বললে উনি আওলীগ এর পোমরা শাখার যুগ্ম সম্পাদক পরিচয়ে ওই ব্যাক্তিকে হুমকি দিয়েছেন বলে জানান। ওদিকে আবার স্থানীয়রা জানান, কাউখালি ভূমি কর্মকর্তা সিরাজুল ইসলাম ও অফিস কর্মচারীদের নেতৃত্বে সীমাহীন দূর্নীতি চলছে। ঘুষ ছাড়া কোনো কাজ করেন না। সেই কারণে প্রতিনিয়ত ভূমি অফিসে হয়রানির শিকার হতে হয় সেবা গ্রহীতাদের। সরকারি ফি ছাড়া অতিরিক্ত টাকা না দিলে কাজ তো দূরের কথা সেবা নিতে আসা লোকজনের সঙ্গে কোনো কথায় বলেন না। পোমরার বসবাস কারি সেলিম আহমদ বলেন, পোমরা ভূমি অফিসে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা টাকা ছাড়া অন্য কিছু বোঝে না। এই অফিসে টাকা ছাড়া কোন ফাইল নড়ে না। জসিম নামের এক ব্যক্তি জানান, জমির খাজনা পরিশোধ করতে গেলে তার কাছে থেকে তিনশত টাকার রিসিভ ধরিয়ে দিয়ে তিন হাজার পাচঁশত টাকা নেয়া হয়। জমির কাগজপত্র ঠিক করে দেবে বলে শাহ আলম নামে ব্যক্তির কাছ থেকে ভূমি কর্মকর্তা সিরাজুল ইসলাম, কর্মচারী আশিকুল আলম ও তৌহিদুল ইসলাম ১২ হাজার টাকা নিয়েছে।
স্থানীয় ভুক্তভোগী গণ জানান, যে জায়গা খারিজ করতে দু’হাজার টাকা প্রয়োজন হয় ওখানে ২০ থেকে পঞ্চাশ হাজার টাকা দিতে হচ্ছে। টাকা দেওয়ার পরও মানুষ মাসের পর মাস বছরের পর বছর ঘুরতে হয়। এসব অপকর্মে বেসরকারী একজন কর্মচারীর মাধ্যমে ভূমি কর্মকর্তা ও সহকারীরা মিলে লুটপাট চালাচ্ছে। ওই বেসরকারি ব্যক্তিটি ব্যাপারে দূর্নীতি প্রকাশ পেলে ভুমি কর্মকর্তা তাকে সরিয়ে পেলে। রবিউল ইসলাম নামের একজন জানান, ২৪ শতাংশ জমি খারিজ করতে আসছিলাম। ২৫ হাজার টাকা চেয়েছে। পরে খারিজ না করে চলে যায়। রাঙ্গুনিয়া উপজেলার ঘাগড়া ইউনিয়ন তহশীল ভূমি অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিরুদ্ধে ব্যাপক অনিয়ম, দূর্নীতি ও ভূমি সেবানেওয়া লোকজন বিভিন্ন রখম হয়রানী পাচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। দূর্নীতিবাজ কাউখালি ভূমি অফিসের কর্মকর্তা সিরাজুল ইসলাম ও কর্মচারী নাহিদ এবং অন্যান্যদের ব্যাপারে হয়রানী বন্ধের দাবীতে উপজেলার ইছাখালি সদরে নির্বাহী কর্মকর্তা নিকট স্বারকলিপি প্রদান করা হয়। কাউখালি ভূমি অফিসের কর্মকর্তা সিরাজুল ইসলামের বিরুদ্ধে তার সম্পূর্ণ অভিযোগ উনি মিথ্যা ও ভিত্তি হীন দাবী করছে। রাঙ্গুনিয়ার ইউএনও ঘোষণা দূর্নীতি ব্যাপারে কোন রখম অভিযোগ পেলে কারোর ব্যাপারে সার নেই বলে উনি ঘোষণা দেন। কিন্তু ঘোষণার পরেও কাউখালি ভুমি অফিসের কর্মকর্তা ওসব কথা কানে না রেখে পূর্বের মতোন দূর্নীতি চলমান রেখেছেন।
Leave a Reply